শেয়ালকে ‘গৃহপালিত’ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন সাইবেরিয়ার বিজ্ঞানীরা  

বন্য জীব-জন্তু কিভাবে গৃহপালিত হয়ে ওঠে তা জানতে কয়েক যুগ ধরে গবেষণা করে যাচ্ছেন সাইবেরিয়ার বিজ্ঞানীরা। সে উদ্দেশ্যেই তারা শেয়ালের ব্রিডিং (প্রজনন) ঘটানোর মধ্য দিয়ে প্রাণীটিকে গৃহপালিত করে তোলার চেষ্টা করছেন।

১৯৬৯ সালে সোভিয়েত জিনতত্ত্ববিদ দিমিত্রি বেলায়েভ ও লুদমিলা ত্রুত রাশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম নগরী নভোসিবির্স্কের কাছে আকাদেমগোরোদভ সাইন্টিফিক রিসার্চ সেন্টারে পরীক্ষামূলক এই কর্মসূচির সূচনা করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেয়ালকে গৃহপালিতকরণের মধ্য দিয়ে কিভাবে ‘ডোমেস্টিকেশন সিন্ড্রোম’ কাজ করে এবং কিভাবে প্রাণীটি মানুষের বিশ্বস্ত গৃহপালিত কুকুরে পরিণত হয়ে থাকতে পারে তার অনুসন্ধান করা।

প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১০০০টি শেয়াল রয়েছে এবং সেখানে ১৫ জন বিজ্ঞানী কর্মরত রয়েছেন। তাদের একজন উরি গার্বেক বলেন, “আমরা দেখতে চাইছি কোন জিন এক্ষেত্রে বদলে যায় এবং কিভাবে তা ঘটে থাকে।’

নভোসিবির্সকে বসবাসকারী বায়োলজিস্ট তাতিয়ানা আব্রামোভা দম্পতি ইতিমধ্যে তাদের বাড়িতে একটি শেয়াল পুষতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় একটি শেয়াল পুষতে চেয়েছিলাম। আমার পোষা শেয়ালটি বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করে সেকথা বলা যায়, কিন্তু সে খুব একটা বাধ্য নয়। শেয়ালটি লাফ দিয়ে টেবিলের ওপর উঠে যায়, কখনো ফ্রিজের ভেতর ঢুকে যায়, এটা-ওটা চুরি করে এবং লুকিয়ে রাখে।’

তার স্বামী আব্রামোভ জানিয়েছেন, শেয়ালটি এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার তাদের মুরগী চুরির চেষ্টাও করেছে। তিনি বলেন, ‘লেস লাগানো অবস্থায় মালিকের সাথে হাঁটতে শেয়ালটি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, তবে বারবার মুরগির খাঁচার দিকে টানতে থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, তার বন্য স্বভাব এখনো সম্পূর্ণ দূর হয়নি।’

বেলায়েভ ১৯৮৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গন ও পরবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক মন্দার ফলে অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে শেয়ালের জিনগত অধ্যয়নের জন্য ‘ডিএনএ সিকোয়েন্সিং’ পদ্ধতি উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে সক্ষম হয়। তথ্যসূত্র: আলজাজিরা

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘রামায়ণ’ শেষের দিনে চোখের জল আটকালেন না রণবীর! Jul 01, 2025
img
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু Jul 01, 2025
img
স্বৈরাচার পতনে যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয় সেই কাজ করছি : প্রধান উপদেষ্টা Jul 01, 2025
img
আগামী ৫ দিন টানা বৃষ্টির আভাস Jul 01, 2025
img
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করল পাকিস্তান Jul 01, 2025
img
সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় মব হয়েছে : মোশাররফ আহমেদ Jul 01, 2025
img
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৩ হাজার, হাসপাতালে ২১৭ জন ভর্তি Jul 01, 2025
img
শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে মুক্তির স্বাদ দিয়েছে, জুলাই ক্যালেন্ডার উদ্বোধনে প্রধান উপদেষ্টা Jul 01, 2025
বিসিবি ছাড়ছেন সামি, জানালেন কারণ Jul 01, 2025
img
আসিফ মাহমুদের বিচার করা উচিত : নিলুফার মনি Jul 01, 2025
img
দেশের ৪ সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত Jul 01, 2025
img
ঢাকায় এবার বাংলাদেশ-নেপাল দ্বিপক্ষীয় এফওসি বৈঠক Jul 01, 2025
img
জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আমরা আদায় করে ছাড়ব: নাহিদ ইসলাম Jul 01, 2025
img
আসন্ন বিপিএল শুরু হচ্ছে কবে, জানাল বিসিবি Jul 01, 2025
img
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ Jul 01, 2025
img
১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষের ২০৩০ সালের মধ্যে অকাল মৃত্যু ঘটতে পারে Jul 01, 2025
img
ঐক্যের কোনো লক্ষণ নেই, বিভাজন আরো বাড়ছে : জিল্লুর রহমান Jul 01, 2025
img
জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা Jul 01, 2025
তাহাজ্জুদ পড়লে কি জ্বিনে ধরে? | ইসলামিক জ্ঞান Jul 01, 2025
img
ম্যানসিটিকে হারিয়ে শেষ আটে নেইমারের সাবেক ক্লাব আল হিলাল Jul 01, 2025